ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক কিংবদন্তি তুল্য ব্যক্তিত্ব। ছাত্রজীবন থেকে ভাষার অধিকার, স্বাধীকার ও স্বাধীনতার পক্ষে নিরন্তর যোদ্ধার নাম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেও আমাদের মাঝে চিরদিন বেঁচে থাকবেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ভাষ্যকার মরহুম মওদুদ আহমদ এই জাতির মুক্তি আন্দোলনের এক অকুতভয় সৈনিক। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য তাঁর অবদান চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবে। মওদুদ আহমদ ছিলেন মৃদুভাষী ও সৌজন্যবোধসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের অধিকারী। জনস্বার্থবিরোধী ও অবিবেচনাপ্রসূত কাজকে তিনি কখনোই পছন্দ করতেন না।
তিনি রাষ্ট্রচিন্তা, সমাজ ব্যবস্থা, গণতন্ত্র এবং সমসাময়ীক রাজনীতির ওপর বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন। তিনি কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়েও নিজ কর্তব্য-কর্মে ছিলেন স্থীর। বিরোধী পক্ষের কটু সমালোচনার মুখেও তাঁর শিষ্টাচারের ঘাটতি হতোনা বরং বিবেকের স্বাধীনতা দিয়ে তিনি সব কিছু বিচার করতেন। ছাত্রজীবন থেকে রাজরোষে পড়ে অসংখ্যবার কারাবরণ করেছেন। বর্তমানের এই নব্য বাকশলী সরকার তাঁর মতো একজন বর্ষিয়ান বিদগ্ধ নেতাকে বারবার কারাগারে নিক্ষেপ করেছে।
মরহুম মওদুদ আহমদের মুত্যু তাঁর উপর সরকারের ধারাবাহিক নির্যাতনেরই ফলশ্রুতি। সরকারি নিপীড়নের মুখোমুখি দাঁড়িয়েও কখনো তিনি আত্মসমর্পন করেননি। হুকুমবাদের বাধ্যকরণের নীতির কাছে তিনি কখনই নতজানু হননি। বরেণ্য এই আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ সর্বদায় ছিলেন সজ্জন, সদালাপী, বন্ধুবৎসল, ছোটদের প্রতি ছিলেন স্নেহপরায়ণ এক ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব।
তিনি শহীদ জিয়া এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে সরকার ও রাজনীতির নানা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। দেশ ও মানুষের মাঝে কাজ করেছেন নিরলসভাবে। তাঁর এই মৃত্যু বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি’র জন্য এক বড় ধরনে শুণ্যতার সৃষ্টি হলো।
আমি তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকাহত পরিবার, আত্মীয়স্বজন, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
0 Comments